পশ্চিম বাংলায় একটা নতুন রোগ দেখা দিয়েছে। তা হলো মনুয়া রোগ বা প্রেমিককে দিয়ে স্বামী হত্যা করার রোগ। এই রোগটা ভীষণভাবে সংক্রামক। যারা এই রোগে আক্রান্ত তারা বেশিরভাগ নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে ।
এর সূত্রপাত বারাসতের মনুয়াকে দিয়ে ।৭ বছর প্রেম করার পর অনুপমকে বিয়ে করে মনুয়া।এবং বিয়ের দেড় বছরের মাথায় প্রেমিককে দিয়ে তাকে খুন করায় মনুয়া নিজেই।
বাড়ির চাপে বিয়ে। স্বামী তাঁকে প্রাণ দিয়ে ভালবাসলেও কখন নিজের স্বামী অনুপমকে ভালবাসতে পারেনি মনুয়া। আর পথের কাঁটা স্বামীকে সরিয়ে দিতেই সে ব্যবহার করেছিল প্রেমিক অজিতকে। খুনের সময়ে অজিতের পকেটে মোবাইল অন ছিল। গোটা ঘটনাটাই ওপার থেকে শুনছিল মনুয়া।
মনুয়া কাণ্ডের ছায়া এরপর পরে কাঁথিতে। সেখানকার পেটুয়াঘাট কোস্টাল থানার বড় বানতলিয়ায় স্ত্রী তৃপ্তি মাইতির প্রেমিকের হাতে খুন স্বামী স্বপন মাইতি।
তারপরে এর ছায়া পড়ে বনগাঁ-র ফুলতলী। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জন্য স্বামী কে কুপিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ স্ত্রীর ও তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে। মৃত শুভঙ্কর মণ্ডল পেশায় ট্যাক্সিচালক। পাঁচ বছর আগে পম্পা নামক যুবতীর সঙ্গে বিয়ে হয় শুভঙ্করের। বছর খানিকের মধ্যে তাঁদের একটি মেয়ে হয়। এরপর ক্রমশ প্রেমিকের(তমাল দাস) সঙ্গে বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে পম্পা। পথের কাঁটা সরাতেই হত্যা করেছে বলে অভিযোগ মৃতের মায়ের।তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় ধৃতেরা অপরাধ স্বীকার করেছে।
উত্তর ২৪ পরগনারই বিজপুর থানার বালিভাড়া এলাকায় বাবুল দাস খুনের ঘটনায় গ্রেফতার মৃতের স্ত্রী অঞ্জু দাস। সেখানেও মনুয়া কাণ্ডের ছায়া ।শম্ভু সাদক নামে এক যুবকের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে অঞ্জু । বাবুল কাজে বেড়িয়ে যাওয়ার পর প্রায় শম্ভু বাড়িতে আসত । সেই সম্পর্কের একমাত্র বাধা, তাদের সম্পর্কের কাটা বাবুলকে হত্যা করার কথা অঞ্জু পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।
মনুয়া কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি ঘটল ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম থানার এক প্রত্যন্ত গ্রামে।
ওডিশা রাজ্য লাগোয়া নয়াগ্রামের কলমাপুকুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তেঁতুলডাঙা গ্রামে প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটল। মৃত ব্যক্তির নাম মদন পাইক (৪০)। খুনের অভিযোগে মদনের স্ত্রী চন্দনা পাইক (৩৭)-কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বাড়ির লোক এমনকি তাদের মেয়েও জানিয়েছে গ্রামেরই মুক্তিপদ হাঁটুই -এর সঙ্গে চন্দনার বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্ক ছিল। তাদের অভিযোগ, রবিবার রাতে মুক্তিপদকে সঙ্গে নিয়ে চন্দনা মদনকে মারধর করে এবং তার ফলেই মদন মারা যায়।
দীর্ঘতর হচ্ছে মনুয়া কাণ্ডের ছায়া।এবার একই ধরনের ঘটনা ঘটল মেদিনীপুর শহর লাগোয়া পাঁচরা গ্রামে । খুন হন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কান্ত মু র্মু (৩৮)। ভোজালির কোপে খুন করা হয় তাকে। অভিযোগ উঠেছে যে তার স্ত্রীর সঙ্গে স্থানীয় এক ব্যক্তির ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কৃষ্ণপ্রসাদ হেম্বরম নামে তার ‘প্রেমিক’-কে দিয়ে নিজের স্বামীকে খুন করায় কান্ত-র স্ত্রী।
মনুয়াকাণ্ডের ছায়া ধরা পড়ল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের কালাপেনিয়া গ্রামে।গোবর্ধন সামন্তের সঙ্গে সমীর বর্মনের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব। সেই সুবাদেই গোবর্ধনের স্ত্রী উমার সঙ্গে পরিচয় হয় সমীরের। সেই সূত্রে প্রায়শই যাতায়াত ছিল। প্রথমে স্বামীর উপস্থিতিতে যাওয়াআসা, পরে তাঁর অনুপস্থিতিতেই। ফলে স্বামীর বন্ধুর সঙ্গে গাঢ় হতে থাকে সম্পর্ক। আর সেই সম্পর্ককে পরিণতি দিতেই প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুন ।
এই প্রকার একের-পর-এক স্বামী হত্যার লীলা চলছে।
বাংলাদেশেও স্বামী হত্যার ঘটনা শুনতে পাওয়া যায়। কিন্তু সেখানের আদালত স্বামী হত্যাকারী মহিলাদের প্রাণদণ্ড প্রদান করেছে।
মেয়েদের দ্বারা এরকম নৃশংস হত্যার ষড়যন্ত্রকারী হওয়া সত্বেও ভারতবর্ষে আজ পর্যন্ত একজন মহিলারো ফাঁসির সাজা হয়নি
তাই আমাদের দাবি যে এইসব মহিলাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার জন্য অন্তত কিছু জনকে ফাঁসি দেওয়া উচিত।